মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা বরগুনায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে মানুষদের অবস্থানের জন্য অতিরিক্ত ১০০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতিমধ্যে জেলার ছয় উপজেলায় নগদ ২৫ লাখ টাকা ও ২০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি সামলাতে জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিটি উপজেলায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা নির্দিষ্ট উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন। ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে জেলাজুড়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সতর্কমূলক প্রচার। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপির পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তালতলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান ভয়েস অব বরিশালকে বলেন, ‘উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১১টি সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। কিন্তু এসব সাইক্লোন শেল্টারে সামাজিক দূরত্ব মেনে সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ৪১টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব মেনে অবস্থান করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি তিনটি জরুরি মোবাইল নম্বর সচল রাখা হয়েছে।
ইউএনও আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘তালতলীর দুর্গম এলাকাগুলোতে অবস্থানরত সাধারণ মানুষের জরুরি চলাচলের জন্য নৌযান ও যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব বাহনের মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনসহ ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত সোলার সিস্টেম সংগ্রহে রাখা হয়েছে। এর ফলে ঘূর্ণিঝড়–পরবর্তী সময়ে যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তাহলেও এই এলাকার মানুষের কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি।
বরগুনা জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ২৫ লাখ টাকা ও ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা প্রতিটি উপজেলায় বণ্টন করা হবে।’
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) দলনেতা জাকির হোসেন বলেন, ‘৬ হাজার ৩৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে করণীয় সম্পর্কে সচেতন করছেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ভয়েস অব বরিশালকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সরকারের নির্দেশনা পেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালে ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করা হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে ১০০ আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। জেলাজুড়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
Leave a Reply